Severity: Notice
Message: Undefined offset: 1
Filename: infosekolah/leftmenudasboard.php
Line Number: 33
Line Number: 34
মার্ক ড্যানিয়েল স্টোনম্যান (ইংরেজি: Mark Stoneman; জন্ম: ২৬ জুন, ১৯৮৭) টাইন এন্ড ওয়্যারের নিউক্যাসল আপোন টাইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কাল থেকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করছেন। আগস্ট, ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।[২]
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডারহাম ও সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন মার্ক স্টোনম্যান। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী তিনি।
মার্লে হিল কাউন্টি প্রাইমারি স্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি। এরপর, হুইকহাম স্কুলে ভর্তি হন। ২০০৫ সালে ডারহামের সদস্য হন। দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে দুই মৌসুম খেলেন। পরবর্তীতে, ২০০৭ সালে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পান।
কিশোর অবস্থাতেই ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলেন। অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেন। ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলেন। তবে, অংশগ্রহণকৃত চার ইনিংসে তিনি মাত্র ২০ রান করেছিলেন। বাদ পড়ে সাজঘরে বেশ বিক্ষিপ্ত আচরণ করেন। এছাড়াও, সিডনি গ্রেড ক্রিকেটে সেন্ট জর্জের পক্ষে পাঁচ মৌসুম খেলেন।
২০০৭ সাল থেকে মার্ক স্টোনম্যানের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রয়েছে। ডারহামে অবস্থানকালে তিনি অন্যতম বিশ্বস্ত উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। স্কয়ার লেগ অঞ্চলে সবিশেষ দক্ষ ছিলেন। ২০০৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধ্বে ডারহামের প্রথম একাদশে ২০ বছর বয়সে অংশ নেন।
নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ৫০ রান তুলেন। এরপর, সাসেক্সের বিপক্ষে ২৩২ বলে ১০১ রান তুলে ডারহামকে জয় এনে দেন ও শিরোপার দৌঁড়ে দলকে টিকিয়ে রাখেন। এটিই তার ঐ সময়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিল। তবে, স্বাভাবিক খেলা প্রদর্শনের জন্যে তাকে বেশ সময় নিতে হয়। প্রথম-শ্রেণীর খেলায় তাকে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ দেয়া হয়নি। উইকেট-রক্ষক ফিল মুস্টার্ডকে একদিনের খেলাগুলোয় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলাতে শুরু করে। ২০০৮ সালে একটি লিস্ট এ খেলায় তাকে রাখা হয়।
২০০৮ ও ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী দলের সদস্য থাকলেও শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান ও অস্ট্রেলীয় তারকা মাইকেল ডি ভেনুতো’র অবসর গ্রহণের পরই কেবলমাত্র তিনি দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পান।
প্রায় চার বছর পর আগস্ট, ২০১১ সালে চ্যাম্পিয়নশীপে নিজস্ব দ্বিতীয় শতরানের ইনিংস খেলেন। এরপরের বছর তৃতীয় শতক করেন। খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি ৩০-এর অধিক গড়ে রান তুলতে পারেননি। তবে, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে শুরু থেকেই বেশ ভালোমানের খেলা উপহার দেন। ২০১২ সালে ৪০-ওভারের খেলায় তিনটি শতরানের ইনিংসের একটি করেন। চেস্টার-লি-স্ট্রিটে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৬ রানের অপরাজিত শতরান করেন। এ পর্যায়ে এটিই তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল।
২০১২ সালে ক্লাবের বর্ষসেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার পান। চারদিনের খেলায়ও তার আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ছিল। ২০১৩ সালে ডারহামের শিরোপা বিজয়ী দলের প্রধান হোতা ছিলেন। উপর্যুপরী দুই মৌসুমে স্টোনম্যান ও স্কট বর্থউইক প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এ কৃতিত্ব ডারহামের অনন্য ইতিহাস হিসেবে স্বীকৃত। এছাড়াও, নিয়মিত অধিনায়ক পল কলিংউডের আঘাতের কারণে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ সালে রয়্যাল লন্ডন কাপে ডারহামের একদিনের দলের নেতৃত্বে ছিলেন।
আর্থিক অসন্তুষ্টির কারণে সারে দলে চলে যেতে বাধ্য হন। ২৬ জুলাই, ২০১৬ তারিখে সারে দলের সদস্যরূপে ২০১৭ সালের জন্যে চুক্তিতে আবদ্ধ হন।[৩] ডারহাম থেকে সারে দলে ফিরে যাবার পর সন্তোষজনক ফলাফল পাননি। পাঁচটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেললেও কোনবারেই তিনি ৬০-এর অধিক রান করতে পারেননি। দল পরিবর্তনের ফলে সারের কোচ ও ডারহামের উপদেষ্টা মাইকেল ডি ভেনুতো’র সাথে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলেন। প্রথম মৌসুমেই ইংল্যান্ড দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান।
উপর্যুপরী চার মৌসুমে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রাহক হন। আরও একবার সহস্র রান তুলেন তিনি। তন্মধ্যে, এসেক্সের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ১৯৭ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস রয়েছে তার। ঐ গ্রীষ্মে সারে দলে কুমার সাঙ্গাকারা, রোরি বার্নস ও মার্ক স্টোনম্যান - এ তিনজন ব্যাটসম্যান চ্যাম্পিয়নশীপের তিন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। তারা প্রত্যেকেই ওভাল মাঠে যথেষ্ট সফলতা পেয়েছিলেন। পাশাপাশি একদিনের খেলায়ও অতি উচ্চমার্গীয় খেলা উপহার দেন। রয়্যাল লন্ডন কাপের চূড়ান্ত খেলায় নটসের বিপক্ষে ১৪৪ রান তুলেছিলেন তিনি। তবে, অ্যালেক্স হেলসের ১৮৭ রানের ইনিংসের কারণে দল পরাজিত হয় ও তার সাফল্য ম্লান হয়ে পড়ে। এ সংগ্রটি লর্ডসের চূড়ান্ত খেলায় সর্বোচ্চ রানের মর্যাদা পায়।
জুলাই, ২০১৮ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজস্ব ১০,০০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছেন।[৪] ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড দল থেকে বাদ পড়ার পর থেকে রান খরায় ভুগতে থাকেন তিনি। ২০১৯ সালের চ্যাম্পিয়নশীপে ৩০-এর কম গড়ে রান তুলেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে এগারোটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন মার্ক স্টোনম্যান। ১৭ আগস্ট, ২০১৭ তারিখে বার্মিংহামে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৪ মে, ২০১৮ তারিখে লর্ডসে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। এখনো তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।
বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মার্ক স্টোনম্যান অবশেষে ৩০তম জন্মদিন উদযাপনের পর ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান। ২০১৭-১৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে ইংল্যান্ডের বিপর্যয়কর ফলাফলে কিছুটা রুখে দাঁড়াতে সমর্থ হয়েছিলেন। তবে, পার্থ টেস্টে শর্ট বলে তিনি পরাস্ত হয়েছিলেন। ১১ টেস্ট শেষে ২৭ গড়ে রান তোলার পর দল থেকে বাদ পড়েন। তার শেষ টেস্ট ইনিংসে পাকিস্তানের লেগ স্পিনার শাদাব খান স্বল্প উচ্চতা থেকে ক্যাচ নিয়েছিলেন। অন্তরঙ্গ বন্ধু ও সাবেক ডারহাম সহযোদ্ধা কিটন জেনিংসের স্থলাভিষিক্ত হন। পরবর্তীকালে কিটন জেনিংস তার পরিবর্তে দলে ঠাঁই পান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন টেস্টে অংশ নেন। তন্মধ্যে, হেডিংলিতে একটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। আগস্ট, ২০১৭ সালে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে তাকে ইংল্যান্ড দলে ঠাঁই দেয়া হয়। তিনি কিটন জেনিংসের স্থলাভিষিক্ত হন ও অ্যালাস্টেয়ার কুকের সাথে উদ্বোধনী জুটি গড়েন।[৫] ১৭ আগস্ট, ২০১৭ তারিখে বার্মিংহামে সিরিজের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টে তার অভিষেক হয়।[৬] তিনি প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে দিবা-রাত্রির টেস্টে অভিষিক্ত হন।
ইংল্যান্ডের কোচ ট্রেভর বেলিসের সন্তুষ্টির কারণ হন ও ২০১৭-১৮ মৌসুমে অ্যাশেজ সফরের জন্যে তাকে দলে রাখা হয়। ২০১৭-১৮ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজেও তাকে রাখা হয়। ২৩ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম টেস্টে অ্যালাস্টেয়ার কুকের সাথে জুটি গড়েন।